আলোচ্য গল্পের ‘ছোটলোক' নামে মেলে লেখক বনফুলের বিষয় নির্বাচনের স্বকীয়তা। তারাশঙ্করের মতো বনফুলও চরিত্র নির্ভর বা ব্যক্তির কথা মনে করে গল্পের বিষয় নির্বাচন করেন। 'ছোটলোক' নামটি চরিত্রকেন্দ্রিক কিন্তু সরাসরি ব্যক্তি নামে চিহ্নিত নয়। বরং এহেন নামকরণে মেলে স্বভাবের ব্যঞ্জনা। উল্লেখ পাওয়া যায় বুর্জোয়া সমাজের বিভক্ত শ্রেণি বৈষম্যর। এমন নামকরণ গভীরতর ব্যাঞ্জনারই। আপাতদৃষ্টিতে ছোটলোক বলতে বোঝায় অশিক্ষিত, উৎপীড়িত, সর্বহারা, হতদরিদ্র শ্রমজীবী মানুষ যাদের পরিশ্রমের ফসল ঘরে তুলে আরাম বিলাসে জীবন কাটায় উচ্চবিত্ত বুর্জোয়া সম্প্রদায়ের মানুষ। সমাজের অশিক্ষিত, উৎপীড়িত, শোষিত, সর্বহারা শ্রমজীবী মানুষরা উচ্চশ্রেণির মানুষের কাছে ছোটলোক হিসেবেই চিহ্নিত। আলোচ্য গল্পে রাঘব সরকারের কাছে রিকশা শ্রমিকটিও তাই। এই হিসাবে বলাই চলে গল্পটির নাম ছোটলোক যথার্থ। তবে গল্পটি বিশ্লেষণে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত টানা অনুচিত।আলোচ্য ছোটলোক গল্পে টানা কাহিনী বা পুরোনো কোনো জোরালো ঘটনা নেই। অতি সামান্য একটি ঘটনাই গল্পটির কাহিনীবস্তু। চেহারায় ও স্বভাবে ভিন্ন শ্রেণির ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন সাধারণ মানুষ রাঘব সরকার। তিনি পরোপকারী হলেও নিজে কখনো অন্যের সাহায্য নেন না। পোশাক সাদাসিধে, শরীরের পরিপাটিও তেমন চোখে পড়ে না। তিনি সহিষ্ণু এবং আদর্শবাদী একজন ব্যক্তি। এক প্রখর দুপুরে এই মানুষটি রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলেন আর তাকে অনুসরণ করছিল শীর্ণ চেহারার এক রিকশাওয়লা। রিকশাওয়ালাদের স্বভাব এমনই খদ্দের পাওয়ার আশায় তারা এভাবেই অনুরোধ ও অনুসরণ করে। এখানেও রিকশাওয়ালাকে দেখি রাঘব সরকারকে অনুসরণ করতে। রাঘব বাবু অন্যের কাঁধে চড়াটা অন্যায় ও পাপকাজ বলে মনে করেন। কিন্তু নাছোড় রিক্সাওয়ালাকে দেখে একসময় তার মনে দয়া হয়। শিবতলা পৌঁছাতে তাকে ছ'টি পয়সায় ভাড়া করে। কিন্তু রিক্সাওয়ালার শত অনুরোধেও তিনি রিকশায় ওঠেন না বরং রিকশাওয়ালাকে তার পিছু পিছু শিবতলা পর্যন্ত নিয়ে যান। কথামতো তাকে ছটি পয়সা দিতে গেলে সেই পয়সা নিতে প্রবল আপত্তি জানায় রিকশাওয়ালা। রাঘববাবু রিকশায় ওঠেনইনি তাই ভাড়া নিতে নারাজ রিকশা শ্রমিক। রাঘব বাবুর স্বভাব অনুযায়ী এটা হল দয়ার দান। কিন্তু রিকশাওয়ালা তো ভিখারি নয়, খেটে খাওয়া মেহনতি মানুষ।
Answers & Comments
Explanation:
আলোচ্য গল্পের ‘ছোটলোক' নামে মেলে লেখক বনফুলের বিষয় নির্বাচনের স্বকীয়তা। তারাশঙ্করের মতো বনফুলও চরিত্র নির্ভর বা ব্যক্তির কথা মনে করে গল্পের বিষয় নির্বাচন করেন। 'ছোটলোক' নামটি চরিত্রকেন্দ্রিক কিন্তু সরাসরি ব্যক্তি নামে চিহ্নিত নয়। বরং এহেন নামকরণে মেলে স্বভাবের ব্যঞ্জনা। উল্লেখ পাওয়া যায় বুর্জোয়া সমাজের বিভক্ত শ্রেণি বৈষম্যর। এমন নামকরণ গভীরতর ব্যাঞ্জনারই। আপাতদৃষ্টিতে ছোটলোক বলতে বোঝায় অশিক্ষিত, উৎপীড়িত, সর্বহারা, হতদরিদ্র শ্রমজীবী মানুষ যাদের পরিশ্রমের ফসল ঘরে তুলে আরাম বিলাসে জীবন কাটায় উচ্চবিত্ত বুর্জোয়া সম্প্রদায়ের মানুষ। সমাজের অশিক্ষিত, উৎপীড়িত, শোষিত, সর্বহারা শ্রমজীবী মানুষরা উচ্চশ্রেণির মানুষের কাছে ছোটলোক হিসেবেই চিহ্নিত। আলোচ্য গল্পে রাঘব সরকারের কাছে রিকশা শ্রমিকটিও তাই। এই হিসাবে বলাই চলে গল্পটির নাম ছোটলোক যথার্থ। তবে গল্পটি বিশ্লেষণে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত টানা অনুচিত।আলোচ্য ছোটলোক গল্পে টানা কাহিনী বা পুরোনো কোনো জোরালো ঘটনা নেই। অতি সামান্য একটি ঘটনাই গল্পটির কাহিনীবস্তু। চেহারায় ও স্বভাবে ভিন্ন শ্রেণির ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন সাধারণ মানুষ রাঘব সরকার। তিনি পরোপকারী হলেও নিজে কখনো অন্যের সাহায্য নেন না। পোশাক সাদাসিধে, শরীরের পরিপাটিও তেমন চোখে পড়ে না। তিনি সহিষ্ণু এবং আদর্শবাদী একজন ব্যক্তি। এক প্রখর দুপুরে এই মানুষটি রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলেন আর তাকে অনুসরণ করছিল শীর্ণ চেহারার এক রিকশাওয়লা। রিকশাওয়ালাদের স্বভাব এমনই খদ্দের পাওয়ার আশায় তারা এভাবেই অনুরোধ ও অনুসরণ করে। এখানেও রিকশাওয়ালাকে দেখি রাঘব সরকারকে অনুসরণ করতে। রাঘব বাবু অন্যের কাঁধে চড়াটা অন্যায় ও পাপকাজ বলে মনে করেন। কিন্তু নাছোড় রিক্সাওয়ালাকে দেখে একসময় তার মনে দয়া হয়। শিবতলা পৌঁছাতে তাকে ছ'টি পয়সায় ভাড়া করে। কিন্তু রিক্সাওয়ালার শত অনুরোধেও তিনি রিকশায় ওঠেন না বরং রিকশাওয়ালাকে তার পিছু পিছু শিবতলা পর্যন্ত নিয়ে যান। কথামতো তাকে ছটি পয়সা দিতে গেলে সেই পয়সা নিতে প্রবল আপত্তি জানায় রিকশাওয়ালা। রাঘববাবু রিকশায় ওঠেনইনি তাই ভাড়া নিতে নারাজ রিকশা শ্রমিক। রাঘব বাবুর স্বভাব অনুযায়ী এটা হল দয়ার দান। কিন্তু রিকশাওয়ালা তো ভিখারি নয়, খেটে খাওয়া মেহনতি মানুষ।
Answehafas
Bsshgdr:
Explanation: